চায়ের কৃষিতাত্ত্বিক বিভিন্ন কার্যক্রম যথা- জমি তৈরী, চারা রোপন, ছাঁটাই, টিপিং, প্লাকিং, ছায়াতরু ব্যবস্থাপনা, রোপন দূরত্ব প্রমিতকরন, খরা ব্যবস্থাপনা, পানি সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা ইত্যাদির উপর এ বিভাগের বিজ্ঞানীগন গবেষণা করে থাকেন। চা চাষে প্রুনিং বা ছাঁটাই একটি অন্যতম প্রধান কৃষিতাত্ত্বিক কার্যক্রম। অপরিণত চা গাছের ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্য হল কম সময়ে গাছকে ঝোপাকৃতি করা। শাখা-প্রশাখা যত বেশী হবে, গাছ হতে ততো বেশী পাতা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হবে। অপরিণত চা গাছ ছাঁটাই এর পদ্ধতিগুলির মধ্যে ডিসেন্টারিং ও ব্রেকিং পদ্ধতি দু’টিই ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। আর চা গাছকে দীর্ঘদিন সজিব, সতেজ এবং লাভজনকভাবে উৎপাদনক্ষম রাখতে প্রাপ্ত বয়স্ক চা গাছের প্রুনিং করা হয়ে থাকে। প্রুনিং এর গভীরতা অনুযায়ি বাংলাদেশে চা চাষে প্রধানত ৪ ধরনের প্রুনিং করা হয়ে থাকে; যথা- লাইট প্রুনিং (এল.পি), ডীপ স্কিফ (ডি.এস.কে), মিডিয়াম স্কিফ (এম.এস.কে) এবং লাইট স্কিফ (এল.এস.কে)। এছাড়া চা গাছের উচ্চতা খুব বেশী হয়ে গেলে তখন উচ্চতা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সাধারত ২৫-৩০ বছর পরপর মিডিয়াম প্রুনিং করা হয়ে থাকে। উৎপাদিত সবুজ পাতার গুণগতমান এবং পরিমাণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি চা গাছের উৎপাদনশীলতা দীর্ঘ্যমেয়াদি রাখতে একটি আদর্শ প্রুনিং সাইকেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিটিআরআই চার বছর মেয়াদি প্রুনিং সাইকেল (এল.পি-ডি.এস.কে-এম.এস.কে-এল.এস.কে) অনুসরন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। চা চাষাবাদে টিপিং ও প্লাকিং গুরুত্বপূর্ণ দু’টি কৃষিতাত্ত্বিক পরিচর্যা। একটি নির্দিষ্ট বছরে চা গাছের উৎপাদনশীলতা মূলত: যথানিয়মে টিপিং ও প্লাকিং এর উপর নির্ভর করে। উৎপাদন ও গুনগতমানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সর্বোচ্চ ফলন পাওয়ার জন্য ভরা মৌসুমে ৭-৮ দিন অন্তর অন্তর প্লাকিং করার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। প্রুনিং, টিপিং এবং প্লাকিং এর পাশাপাশি চায়ের অন্যান্য কৃষিতাত্ত্বক পরিচর্যাসমূহও চা চাষাবাদে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।