চা প্রক্রিয়াজাতকরণের সমস্যাবলী নিরূপণ ও চা কারখানায় প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতির উন্নয়ন ও চায়ের প্যাকিং সামগ্রী প্রমিতকরণ এ বিভাগের প্রধান কর্মক্ষেত্র । চা প্রস্তুতপ্রনালী সম্বন্ধে চা চাষীদের কিছুটা জ্ঞান থাকা প্রয়োজন কারন মাঠে উৎপাদিত পাতার মানের উপরই শুধু নির্ভরশীল নয়, প্রস্তুতপ্রণালী ও দক্ষতার উপরও নির্ভরশীল।
চা প্রক্রিয়াকরণ: আমাদের দেশে কালো চা ও সবুজ চা দুই প্রকারের চা প্রস্তুত হয়ে থাকে। তবে কালো চা পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয়। কালো চা দুই পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয় যথা সিটিসি ও অর্থোডক্স পদ্ধতি। এর মধ্যে সিটিসি পদ্ধতিই বর্তমানে অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয়। কালো চা প্রক্রিয়াকরণে ৫টি ধাপ অনুসরণ করা হয়ে থাকে। যেমন-
১) উইদারিং বা নির্জীব করাঃ সংগৃহীত পাতার পানির পরিমান কমানোই এ ধাপের মূল উদ্দেশ্যে। চয়নের পাতাতে সাধারনত ৮০% পানি থাকে। তা কমিয়ে ৭০% এ নামিয়ে আনতে হয়। উপযুক্ত উইদারিং ট্রাফের মাধ্যমে ১২-১৪ ঘন্টায় এ কাজ করা হয়।
২) প্রসেসিং বা পাতাকে ছিন্নভিন্ন করাঃ নির্জীবকৃত পাতাকে ছোট ছোট করে কাটতে ও চূর্ণ বিচূর্ণ করতে প্রথমে রোটারভ্যান ও পরে পর্যায়ক্রমে কর্তনের জন্য ৪/৫ টি সিটিসি মেশিনের ভেতর চালনা করা হয়।
৩) ফার্মেন্টেশন বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানঃ চূর্ণ বা পেষণকৃত পাতাকে তামাটে নং এ রুপান্তরিত করার জন্য পাকা মেঝে বা ট্রের উপর পাতলা করে ছড়িয়ে আনুমানিক ১ ঘন্টা রাখতে হয়।
৪) ড্রায়িং বা শুকানোঃ পাতার রাসায়নিক বিক্রিয়া বন্ধ ও পাতা শুকাতে এক ধরনের ড্রায়ার মেশিন ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে ডিএফবিডি ড্রায়ার এর ব্যবহার বেশি জনপ্রিয়। ড্রায়ার হতে বের হওয়া চা পাতায় জলীয় অংশের পরিমান ৩% এর বেশি যাতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
৫) সর্টিং বা শ্রেণীবিভাজনঃ বাজারজাতকরণের সুবিধার্থে প্রস্তুতকৃত পাতাকে আকার অনুসারে চালনি দিয়ে ভাগ করা হয় যাকে গ্রেডিং বলা হয়। আকৃতি অনুসারে এর নামকরণও ভিন্ন হয়ে থাকে যেমন- বিওপি, ওএফ, পিডি ইত্যাদি।